স্বাস্থ্যসেবায় ইতিবাচক পরিবর্তন : চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে সিজারের হার কমছে

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে মোট ৪০৮টি নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। এদের মধ্যে এপ্রিল মাসে ১৪৩টি, মে মাসে ১৪৫টি এবং জুন মাসে ১২০টি। একই সময়ে সিজারিয়ানের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৪৫টি, ৪৫টি এবং ৩০টি (৩০ জুন পর্যন্ত)। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি মাসে গড়ে ৭০ শতাংশের বেশি ডেলিভারি স্বাভাবিক পদ্ধতিতে হচ্ছে, যা দেশের অনেক জেলা হাসপাতালের তুলনায় ব্যতিক্রমী।
চাঁদপুর সদর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অনেক প্রসূতী মা এবং তাদের পরিবার এখন অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ানের বদলে স্বাভাবিক প্রসবের পক্ষে সায় দিচ্ছেন। এ প্রবণতার পেছনে রয়েছে গর্ভাবস্থায় স্বাস্থ্য শিক্ষার বিস্তার, সরকারি হাসপাতালের উন্নত চিকিৎসা পরিকাঠামো, এবং চিকিৎসকদের আন্তরিক ও পরিশ্রমী প্রচেষ্টা।
চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, গর্ভাবস্থায় সঠিক সেবা ও পরামর্শ পেলে অধিকাংশ নারী নিরাপদে স্বাভাবিক প্রসব করতে পারেন। এতে একদিকে যেমন সিজারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে, অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ এ কে এম মাহাবুবুর রহমান বলেন, “সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বেড়েছে। অনেক মা ও তাদের পরিবার অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ানের বদলে নরমাল ডেলিভারিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। আমরা চিকিৎসক দল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি। পাশাপাশি হাসপাতাল পর্যাপ্ত দক্ষ মিডওয়াইফ ও প্রয়োজনীয় ওষুধ-পথ্যের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।”
বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেছেন, সরকার যদি জেলা পর্যায়ে আরও প্রশিক্ষণ, জনসচেতনতা ও সেবা অবকাঠামোর উন্নয়নে মনোযোগ দেয়, তবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অপ্রয়োজনীয় সিজারের হার কমানো সম্ভব হবে।
চাঁদপুরের এই অগ্রগতি শুধুমাত্র সংখ্যাগত বৃদ্ধি নয়, এটি স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, চিকিৎসা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, এবং সরকারি সেবায় জনগণের আস্থা বৃদ্ধির এক স্পষ্ট প্রমাণ।