চাঁদপুর সকাল

এবার শুরু জাটকা ইলিশ শিকারের ওপর ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা

৩ দিন আগে
এবার শুরু জাটকা ইলিশ শিকারের ওপর ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা


ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাছ সংরক্ষণের লক্ষ্যে সারাদেশে শুরু হয়েছে জাটকা ইলিশ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ও মজুতের ওপর ৮ মাসব্যাপী নিষেধাজ্ঞা।

এই নিষেধাজ্ঞা শনিবার (১ নভেম্বর ২০২৫) থেকে কার্যকর হয়েছে, যা চলবে আগামী ৩০ জুন ২০২৬ পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে ১০ ইঞ্চি (২৫ সেন্টিমিটার) এর চেয়ে ছোট সব ইলিশ, অর্থাৎ জাটকা আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় বা মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং মৎস্য অধিদফতরের বাস্তবায়নে গৃহীত এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো এবং দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই মাছের প্রজনন চক্রকে সুরক্ষা দেওয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাটকা সংরক্ষণে ধারাবাহিক এ উদ্যোগের ফলে গত কয়েক বছরে দেশের ইলিশ উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ (সংশোধিত) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৮৫ অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। যে কেউ এই আইন লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, অথবাসর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড,কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

এছাড়া মাঠ পর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম এবং জাটকা ধরা রোধে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদফতর। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন, জেলা মৎস্য অফিস, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ যৌথভাবে নদী ও সাগরে অভিযান পরিচালনা করবে।

তদুপরি, সারা দেশে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এই অভিযানে অংশ নেবে। মৎস্য অধিদফতর জানিয়েছে, এ সময় নদ-নদীতে নিয়মিত টহল, জাটকা জব্দ ও অবৈধ জাল ধ্বংসের পাশাপাশি সাধারণ মৎস্যজীবীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগও নেওয়া হবে।

এর আগে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত ‘ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫’ পরিচালনা করা হয়, যাতে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা করা যায়। সে সময় দেশের উপকূলীয় ও নদীবেষ্টিত এলাকায় মা ইলিশ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল।

মৎস্য অধিদফতর সকল মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী ও নাগরিককে এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, আজকের সাময়িক ত্যাগ ভবিষ্যতে ইলিশের প্রাচুর্য নিশ্চিত করবে। আমাদের সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশে ইলিশের ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।

চাঁদপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশালসহ উপকূলীয় অঞ্চলে ইতোমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পোস্টার, ব্যানার, মাইকিং ও গণসচেতনতামূলক সভার মাধ্যমে জনগণকে নিষেধাজ্ঞা মানতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।