মতলব-গৌরীপুর সড়ক : ৪৪ কিলোমিটার সড়কে শতাধিক বাঁক, ঘটছে দুর্ঘটনা

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর থেকে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটার মতলব-গৌরীপুর পেন্নাই সড়কে প্রায় ১১০টি বাঁক রয়েছে। এ সড়কে ঢাকা-মতলব রুটে বাসসহ নানা পরিবহনে যাতায়াতে যাত্রীদের প্রতিদিনই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বাঁকের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, মতলব-গৌরীপুর এই সড়কটি চাঁদপুরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক। এটি মূলত মতলব-গৌরীপুর সংযোগ করেছে, যা চাঁদপুরকে ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত করে। বাঁকগুলো এ সড়ককে দুর্ঘটনা প্রবণ করে তুলেছে। এই সড়কে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হওয়ায় জনসাধারণ পড়েছে চরম ভোগান্তিতে।
চাঁদপুর সওজ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলা থেকে দাউদকান্দির গৌরীপুর এলাকা পর্যন্ত মতলব-গৌরীপুর পেন্নাই সড়কটির দৈর্ঘ্য ৪৪ কিলোমিটার। এর প্রস্থ ১৮ ফুট। ২০০৯ থেকে ২০১৭সাল পর্যন্ত সড়কটির বাঁক নিরসন, ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য কাজে ৮৯ কোটি ব্যয়ে প্রায় ৪০টি বাঁক সোজা করা হয়। এখন বাঁক আছে প্রায় ১১০টি।সূত্রটি জানা যায়, এই সড়কটি মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও পর্যন্ত চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায় এবং তার পর থেকে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন। চাঁদপুরকে ঢাকার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, সিএনজি, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন।
বাসচালক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদপুরের মতলব মুন্সীরহাট থেকে দাউদকান্দির গৌরীপুর পর্যন্ত পেন্নাই সড়কে অনেক বাঁক রয়েছে। এ বাঁকগুলো মেরামত করা জরুরি। শুধু বাঁক নয়, সড়কটির অবস্থাও বেহাল। আমরা গাড়ি চালাই অনেক ঝুঁকি নিয়ে। বাঁকের কারণে রাস্তা ভালো করে দেখা যায় না। বাঁকের জন্য দুর্ঘটনাও বেশি ঘটে থাকে।’
মতলব পৌরসভার বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকর্মী আবদুল লতিফ ও কেএফটি কলেজিয়েট স্কুলের প্রভাষক বদিউল আলম বাবু বলেন, ‘এটি একটি আঞ্চলিক মহাসড়ক হওয়া সত্ত্বেও এই সড়কের বেহাল অবস্থা। জায়গায় জায়গায় গর্ত ও বাঁকের কারণে এ সড়কটি হয়ে উঠেছে মানুষের জন্য মরণফাঁদ। মানুষের জীবন রক্ষায় এ সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন।’
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতলব দক্ষিণ উপজেলা শাখার সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাঁকের কারণে এই সড়কে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। গত এক/দুই মাসে এই সড়কেই পাঁচ/ছয় জনের প্রাণ গেছে। সড়কটির বাঁক দ্রুত কমিয়ে আনা দরকার।’
চর মুকুন্দি এলাকার সেলিম প্রধানীয়া বলেন, ‘প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে এই সড়ক দিয়ে আমরা চলাচল করি। আমাদের চোখের সামনে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে।’ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই সড়কে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার খবর শুনি ও দেখি। এতে আমরা আতঙ্কে থাকি।’
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সামছুজ্জোহা জানান, এ সড়কটি মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও পর্যন্ত চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতায়। অতিবৃষ্টির ফলে সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। এছাড়া ৪৪ কিলোমিটার সড়কে প্রায় ১১০টি রয়েছে। সড়কটি মেরামত ও বাঁক ঠিক করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।




