চাঁদপুর সকাল

চাঁদপুরে ‘জুলাই শহিদ দিবস’ পালন

২ মাস আগে
চাঁদপুরে ‘জুলাই শহিদ দিবস’ পালন
চাঁদপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে ‘জুলাই শহিদ দিবস’। এ উপলক্ষে (১৬ জুলাই ২০২৫) বুধবার সকাল ১০টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় জুলাই শহিদদের স্মরণে এক আলোচনা সভা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, এই মুহূর্তে সারাদেশে ৮৪৪ জন শহিদের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এখনো অনেক শহিদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে, যাদের পরিচয় এখনো সনাক্ত করা যায়নি। শহিদ আবু সাঈদের বুলেটের সামনে দাঁড়ানো ছিল একটি আইকনিক মুহূর্ত—যা জাতিকে এখনো নাড়া দেয়।


তিনি আরও বলেন, জুলাই শহিদরা শুধু একটি রাজনৈতিক দাবির জন্য নয়, মানুষের অধিকার ও ন্যায়ের জন্য জীবন দিয়েছেন। বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, সুশাসনভিত্তিক সমাজ গড়াই ছিল তাঁদের চেতনা। এই চেতনা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই চেতনাকে ধরেই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে।


জেলা প্রশাসক জানান, ইতোমধ্যে প্রত্যেক শহিদ পরিবারের মাঝে প্রায় ২০ লাখ টাকার এফডিআর বিতরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও সহায়তা প্রদান করা হবে। শহিদদের প্রতি দলমতের ঊর্ধ্বে সম্মান জানানো এবং তাঁদের জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানান তিনি।


আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাখাওয়াত জামিল সৈকত, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্লাহ সেলিম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশা, এনসিপি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কাজী রাসেল এবং জুলাই মঞ্চ জেলা আহ্বায়ক জাকির হোসেন।


আহত যোদ্ধা জাকির হোসেন, শহিদ সাজ্জাদ হোসেনের পিতা হোসেন রাজা এবং শহিদ পরিবার ও আহতদের পক্ষ থেকেও আবেগঘন বক্তব্য প্রদান করা হয়। তাঁরা বলেন, জুলাই আন্দোলন কোনো দলের ছিল না—এটা ছিল জাতির। আমরা তা জাতির জন্য উৎসর্গ করেছি। এখনো সন্তান হারানো মা-বাবারা কষ্টে আছেন। আমরা চাই সরকার সবসময় তাঁদের সম্মান ও স্মরণে রাখুক।


অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ গোলাম জাকারিয়া, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এরশাদ উদ্দিন, জেলা তথ্য অফিসার তপন বেপারী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা।

সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিম। এই দিনটি জাতীয় শোক ও শ্রদ্ধার প্রতীক হয়ে উঠেছে চাঁদপুরবাসীর কাছে।