চাঁদপুর সকাল

রাশিয়ার একাধিক জ্বালানি স্থাপনায় ইউক্রেনের হামলা, পেট্রলের দামে রেকর্ড

প্রায় ১ মাস আগে
রাশিয়ার একাধিক জ্বালানি স্থাপনায় ইউক্রেনের হামলা, পেট্রলের দামে রেকর্ড
রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলা নাটকীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে পেট্রলের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সংকট নিয়ন্ত্রণে আনতে মস্কো সরকার পেট্রল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও ভোক্তাদের জন্য পরিস্থিতি স্বস্তিকর হয়নি।

সিএনএনের হিসাবে দেখা যায়, শুধু চলতি আগস্ট মাসেই অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রুশ তেল ও গ্যাস স্থাপনায় ইউক্রেনীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, এসব শোধনাগার বছরে প্রায় ৪ কোটি ৪০ লাখ টন জ্বালানি প্রক্রিয়াজাত করে— যা রাশিয়ার মোট সক্ষমতার ১০ শতাংশেরও বেশি। ফলে মস্কোর জ্বালানি খাতে ইউক্রেনের ড্রোন হামলার প্রভাব কার্যকর বলে মনে করা হচ্ছে।


রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও দক্ষিণাঞ্চলের বড় কয়েকটি স্থাপনায় হামলার বিষয়টি স্বীকার করেছে। ভলগোগ্রাদের লুকওয়েল শোধনাগারে ১৪ আগস্ট ভোরে ড্রোন হামলার পর সেখান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। এর পাঁচ দিন পর ১৯ আগস্ট একই স্থানে আবারও হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া সারাতভ অঞ্চলের একটি বড় শোধনাগার এবং রোস্তভ অঞ্চলের অন্য একটি শোধনাগারে হামলার ফলে কয়েক দিন ধরে আগুন জ্বলতে থাকে।


এদিকে জ্বালানি সরবরাহব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটায় রাশিয়ার কয়েকটি অঞ্চল এবং দখলকৃত ক্রিমিয়ায় পেট্রলের ঘাটতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। ক্রিমিয়ার গভর্নর সের্গেই আকসেনভ এ সংকটের জন্য সরবরাহব্যবস্থার দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছে।


ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনপন্থী গোষ্ঠী ইয়েলো রিবনের এক সদস্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে লিখেছেন, 'সবচেয়ে ভালো মানের পেট্রল বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে। এটা প্রমাণ করে, ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার বাস্তব প্রভাব এখন রুশ অর্থনীতিতে পড়ছে।'


জ্বালানি সংকটের কারণে দামও লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। সেন্ট পিটার্সবার্গ এক্সচেঞ্জে শুধু আগস্ট মাসেই পেট্রলের পাইকারি দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে এ বৃদ্ধির হার প্রায় ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সরকার ভর্তুকি দিলেও বাড়তি চাপ শেষ পর্যন্ত পড়ছে ভোক্তাদের ওপর, বিশেষ করে রাশিয়ার দূর-পূর্বাঞ্চলে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি।


রুশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনইএফটি রিসার্চের ব্যবস্থাপনা অংশীদার সের্গেই ফ্রোলভ কোমারসান্ত পত্রিকাকে বলেন, 'দুর্ভাগ্যবশত আমাদের পূর্বাভাস ইতিবাচক নয়। দাম কমতে অন্তত আরও এক মাস সময় লাগবে বলে মনে হচ্ছে।' তার মতে, তেল শোধনাগারে একের পর এক দুর্ঘটনা ও হামলাই বর্তমান দামের ঊর্ধ্বগতির প্রধান কারণ।


তবে সামরিক দিক থেকে পরিস্থিতির প্রভাব কিছুটা সীমিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, রুশ সেনাবাহিনীর মূল চাহিদা ডিজেল, আর এই সরবরাহ তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।