৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াল যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ, মাথাপিছু ১ লাখ ১১ হাজার

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ নতুন রেকর্ড গড়েছে। মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ ট্রিলিয়ন ১৯ বিলিয়ন ৮১৩ মিলিয়ন ডলার।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকেরা মাথাপিছু প্রায় ১ লাখ ১১ হাজার ডলার ঋণের বোঝা টানছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংকট্যাংক পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের হিসাবে, এই অঙ্কটি চীন, ভারত, জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির সম্মিলিত মূল্যের সমান।
মাত্র দুই মাস আগেই, গত আগস্টের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋণ ছিল ৩৬ ট্রিলিয়ন এবং ওই বছরের জুলাইয়ে ৩৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
পিটার জি পিটারসন ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মাইকেল এ. পিটারসন বলেন, মার্কিন রাজনীতিবিদরা তাদের ‘মৌলিক আর্থিক দায়িত্ব’ পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন।
তিনি বলেছেন, প্রতিনিয়ত ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করে ঋণ বাড়ানো এবং সংকটের পর সংকট তৈরি করে বাজেট পরিচালনা কোনো মহান জাতির জন্য উপযুক্ত নয়।
এখনই দায়িত্বশীল সংস্কার প্রয়োজন, নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিপদে পড়বে।
এ বছরের মে মাসে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিজ যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের মান ‘এএএ’ থেকে কমিয়ে ‘এএ১’ করেছে। ‘এএএ’ মান দিয়ে বোঝানো হতো এই ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে কম।
সংস্থাটি জানায়, ধারাবাহিকভাবে বিশাল বাজেট ঘাটতি ও ক্রমবর্ধমান সুদের খরচ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়াই এই অধঃপতনের কারণ।
এর আগে ফিচ ২০২৩ সালে এবং স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস (এস অ্যান্ড পি) ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং নামিয়ে দেয়।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র কতটা ঋণ নিতে পারে তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বর্তমানে ঋণের গতি অস্থিতিশীল ও বিপজ্জনক এই বিষয়ে প্রায় সবাই একমত।
পেন ওয়ারটন বাজেট মডেলের ২০২৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মার্কিন ঋণ যদি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তাহলে আর্থিক বাজার সে চাপ সামলাতে পারবে না।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস (সিবিও) অনুমান করছে, বর্তমান হারে চলতে থাকলে দেশটির ঋণ ২০৪৭ সালের মধ্যে জিডিপি-র ২০০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এর একটি বড় কারণ হল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল এক্ট’-এর আওতায় গৃহীত ব্যাপক করছাড় নীতি।




