চাঁদপুরে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ল্যাবের সরঞ্জাম ‘লুট’, বন্ধ কার্যক্রম

করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে এ জেলায় পরীক্ষার জন্য সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির বাড়িতে একটি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছিল; যা গত বছরের অগাস্টে পরিবর্তিত পরিস্থিতির মধ্যে লুট হয়ে যায় বলে জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, “সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি নিজ বাসায় একটি ল্যাব করেছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ল্যাবটি মিসিং। আপাতত চাঁদপুরে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই।”
দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি যখন ভয়াবহ আকার ধারণ করে, তখন চাঁদপুর অন্যতম ছিল। প্রতিদিন জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ছিল লক্ষণীয়।
২০২০ সালের ২৭ জুলাই সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির উদ্যোগে তার বাবার নামে ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট এবং চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের যৌথ উদ্যোগে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হয়। তবে ল্যাবটি চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল কিংবা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে না করে দীপু মনির বাস ভবনে স্থাপন করা হয়।
পরবর্তীতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আরটি-পিসিআর ল্যাবটির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
গত বছর ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরেও ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সেই সময় শহরের নতুন বাজার কদমতলা এলাকায় দীপু মনির বাসায় ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এতে করে করোনাভাইরাস পরীক্ষার আরটি-পিসিআর ল্যাবের মেশিন ও সরঞ্জাম লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ হয়। এরপর থেকে ল্যাবের আর কোনো অস্তিত্ব ছিল না। নতুন করে আবার করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে উৎকণ্ঠা বেড়েছে।
চাঁদপুর জেলা সিভিল কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, জেলা এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়েছেন ৯৪ হাজার ৯৬ জন। এর মধ্যে পজিটিভ ১৭ হাজার ৬৫৮ জন আর নেগেটিভ ৭৬ হাজার ৪৩৮ জন। এ জেলায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২৪৬ জনের।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সিয়াম ও ইসমাইল হোসেন জানান, হঠাৎ করে দেশে করোনাভাইরাস দেখা দিলেও চাঁদপুরে কোনও সতর্কতা দেখা যাচ্ছে না।
হাসপাতালে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনও ল্যাব নেই। এখন থেকে কুমিল্লা গিয়ে পরীক্ষা করাতে হয়। দ্রুত চাঁদপুরে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার দাবি জানান তারা।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান বলেন, “আপাতত করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনও ল্যাব নেই। সন্দেহভাজন কেউ আসলে তাকে কুমিল্লায় পাঠানো হচ্ছে। তবে নতুন করে চাঁদপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি।”
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া নিয়মিত মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।